বাঘারপাড়া (যশোর) প্রতিনিধিঃ

যশোরের বাঘারপাড়ায় যৌতুকলোভী নেশাখোর স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে মেরে হাত পা ভেঙ্গে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্বামী ও শ্বাশুড়ী
যৌথভাবে লাঠির আঘাতে গৃহবধু রেহেনা খাতুনের দুটি হাত ও পা ভেঙ্গে দিয়েছেন। আহত রেহেনা খাতুন বাঘারপাড়া উপজেলার হলদা
গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে । আহত রেহেনার মা ফাতেমা বেগম
চার জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন ।
পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে ১’লক্ষ টাকার কাবিনে
মুসলিম শরিয়াত অনুযায়ি জহুরপুর ইউনিয়নের ছোটক্ষুদ্রা গ্রামের
নূরআলীর ছেলে ইকরামুলের সাথে বিবাহ হয়। বিবাহের পর থেকে
বিভিন্ন সময়ে স্বামীর বাড়ির লোক যৌতুক দাবি করে আসছে।
রেহেনার বাবা আনোয়ার হোসেন বলেন, আমার স্ত্রী রাস্তার শ্রমিকের
কাজ করে। আমি ভ্যান চালাই। সামান্য আয়ে চলে আমাদের সংসার। তারপর
ও মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে পর্যায়ক্রমে দেড় লক্ষ টাকা দিয়েছি। পরে
বিভিন্ন সময়ে জামাইয়ের চাপে আরও প্রায় নব্বই হাজার টাকা
দিয়েছেন। বর্তমানে আরও ১ লক্ষ টাকার জন্য মেয়েকে চাপ দিচ্ছে। এ
টাকা না পেয়ে মেয়েকে মেরে চার হাত পা ভেঙ্গে দিয়েছে। শুক্রবার সকালে
তাকে মুহুর্ষ অবস্থায় বাঘারপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়।
গৃহবধু রেহেনা খাতুন বলেন, ‘আমার স্বামী নেশাগ্রস্থ লোক।
বিভিন্ন সময়ে বাবার কাছ থেকে টাকা আনতে বলে। না আনতে পারলেই
মারপিঠ শুরু করে। গত বৃহস্পতি বার ১ লক্ষ টাকা আনতে বাবার বাড়ি
যেতে বলে। আমি পারবো না বলার সাথে সাথে লাঠি দিয়ে মার শুরু করে ।
এ সময় জ্ঞান হারাই আমি। পরে স্থানীদের সহযোগিতায় হাসপাতালে
ভর্তি হই।
অভিযুক্ত ইকরামুলের ফোনে যোগাযোগ করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে
শ্বাশুড়ী জুলেখা বেগম মারপিটের কথা স্বীকার করে বলেন গাজা সেবনের
অপরাধে আমার ছেলে জেল খেটেছে।
হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ফারজানা সিনথিয়া জানান, রেহেনার
দু হাত ও ডান পা ভেঙ্গে গেছে। বাম পা আঘাতে ফুলে উঠেছে। তাই
ব্যান্ডেজ করা হয়েছে। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে মারের আঘাতে রক্ত
জমাট বেঁধেছে।

বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ উদ্দিন জানান,
গৃহবধুকে হাত পা ভেঙ্গে দেওয়ার ঘটনায় মামলা রেকর্ড হয়েছে। তদন্ত
অফিসার ইতোমধ্যে আসামি গ্রেফতারে কাজ শুরু করেছে।